এ বইয়ে মোট তেরোটি ছোটগল্প স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে দশটি লেখা সাধু ভাষায়, এবং তিনটি লেখা চলিত ভাষায়।
Product Code (SKU): 20001
Seller: Finva Soft
TK.280
TK.196
You Save
TK.84
(30%)
Whole Sell: TK.175
In Stock (10 copies available)
* Order before finish the stock
Select Color:
এ বইয়ে মোট তেরোটি ছোটগল্প স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে দশটি লেখা সাধু ভাষায়, এবং তিনটি লেখা চলিত ভাষায়। তবে সাধু ভাষার যে-রূপ গল্পগুলোতে পাওয়া যায়, সে-রূপ মহিউদ্দিন মোহাম্মদের নিজস্ব। পড়লে মনে হবে, তিনি শুধু গল্পই রচনা করেন নি; গল্পের জন্য আলাদা একটি ভাষাও নির্মাণ করেছেন। বাংলা সাধু ভাষার মতো ভারী ও অভিজাত একটি ভাষাও যে এতো সুবোধ্য আর রসালো হতে পারে, তা পাঠকমন্ডলী এ বইয়ে বিস্ময়ের সাথে আবিষ্কার করবেন। গল্পগুলোর একটি সাধারণ পরিচিতি এখানে দেয়া প্রয়োজন মনে করছি, কারণ সব পাঠকের পঠনশক্তি সমান নয়। অনেক কাঁচা পাঠক আছেন, যারা নাম পুরুষে বর্ণনা করা গল্পের ভাষ্যকারের কণ্ঠকে লেখকের নিজস্ব প্রাবন্ধিক কণ্ঠ মনে করে তালগোল পাকাতে পারেন। গল্পের চরিত্রকে তারা গুলিয়ে ফেলতে পারেন লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের সাথে। কেউ কেউ প্রেক্ষাপট এবং দার্শনিক বোধ অনুধাবন করতে গিয়ে পরিচয় দিতে পারেন ব্যর্থতার। এ বইয়ের কোনো গল্পই কিচ্ছা-কাহিনীসর্বস্ব নয়। অনেকটা অ্যাবস্ট্রাক্ট চিত্রকর্মের মতো। ধীরে লয়ে এর রস আস্বাদন করতে হবে। পাঠ করতে হবে বারবার। প্রতি পাঠেই এগুলো ধরা দিতে থাকবে নতুন আঙ্গিকে। গল্পের কথকগুলোকে মনে হবে কালের গভীর থেকে উঠে আসা কোনো দুখী কণ্ঠ, যারা অন্য কারও কলমে প্রাণ খুঁজে পায় নি। একটি পুকুর কী বলিতে চায়? এ গল্পে একটি পুকুর হঠাৎ মানুষের মতো কথা বলতে শুরু করে। তার ভেতর ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা একের পর এক বর্ণনা করতে থাকে। যার কণ্ঠ নেই, যে নির্বাক, যে ছিলো সামান্য জলাধার, সে লেখকের কলমের স্পর্শে হয়ে উঠে সবাক। মসজিদের চিঠি এখানে একটি ভাঙাচোরা মসজিদ তার মুসল্লিদের ব্যাপারে নানা সাক্ষ্য দিতে থাকে। সমাজে বাস করা ধর্মসৈনিকদের চরিত্রের নানা দিক তার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়। স্মৃতি থেকে বহু কথা সে পাঠকদেরকে জানায়, যা একইসাথে রোমাঞ্চকর ও বেদনার। দেশটি নষ্ট হইয়া গেলো এখানে গল্পের ভাষ্যকার এক সন্ধ্যায় একটি পত্রিকা পড়তে বসেন। সংবাদ পাঠ করার ফাঁকে ফাঁকে তিনি করতে থাকেন নানা স্বগতোক্তি। পত্রিকাটিকে তার কাছে মনে হয় একটি ময়লাবাহী রেলগাড়ি। মানুষ যে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়ে তুচ্ছ জিনিস নিয়ে মাতামাতি করে, তা এ গল্পে ধরা দিয়েছে শৈল্পিকভাবে। মানুষ ও বানরের পার্থক্য গল্পটির স্টোরিটেলার, যিনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, হঠাৎ বানরসমৃদ্ধ একটি জঙ্গলে হারিয়ে যান। জঙ্গলটিতে কিছু সময় কাটানোর পর বানরদের জীবনের সাথে মানুষের জীবনের একটি তুলনামূলক চিত্র তার নজরে আসে। এ চিত্রই এখানে মুদ্রিত ভাষায় অঙ্কিত হয়েছে। আধুনিক নগর জীবনের মানুষেরা বানরদের চেয়ে ভালো আছে কি না, তা অনুধাবন করতে চাইলে আমাদেরকে এ চিত্রে চোখ বুলাতে হবে। ভণিতা ভণিতা এ গল্পের প্রধান চরিত্রের নাম। তিনি একবার একটি ইসলামী মাহফিলে ওয়াজ শুনতে যান। মহিলা, এ অজুহাতে লোকজন তাকে মাহফিল থেকে তাড়িয়ে দেয়। তখন পুরুষ-শাসিত সমাজের উদ্দেশ্যে খুব তীব্র ভাষায় তিনি একটি ভাষণ দেন। গল্পের কথক সে-ভাষণটিকেই এখানে লিপিবদ্ধ করেছেন। ঈশ্বরের টেলিফোন এ গল্পে একজন মানুষ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিটি পড়ে ঈশ্বর খুব খুশি হন, এবং পত্রলেখকের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন। টেলিফোনে ঈশ্বর তাঁর নিজের সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করেন। এসব মন্তব্যে ঈশ্বরের যে-পরিচয় ফুটে ওঠে, তার সাথে মানুষের কল্পিত ঈশ্বরের কোনো মিল পাওয়া যায় না। দরখাস্ত গল্পটি একটি চাকুরির বিজ্ঞাপন নিয়ে। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, বহির্বিশ্বে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভালো কলামিস্ট নিয়োগ দিতে চায়। তখন আলি কামাল নামের এক লেখক চাকুরিটি পেতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর দরখাস্ত লিখেন। দরখাস্তের ভাষায় উঠে আসে এমন অনেক নির্মম আওয়াজ, যা শুনতে পাঠকের হৃদয় ও কান উভয়টিই পরিষ্কার রাখা দরকার। আমাদের দাদী এ গল্পটি সম্ভবত শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা, তবে বয়স্কদের জন্যই এটিকে অধিক প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। কিছুটা ম্যাজিক-রিয়ালিজমের চর্চাও এখানে আছে। গল্পটিতে একদল নাতী-নাতনী তাদের মৃত দাদী সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে। সমাজের চেয়ে অনেক অগ্রসর এক নারীর সন্ধান এ গল্পে পাওয়া যায়। পাখির বাসা গল্পটি বেশ দীর্ঘ ও অদ্ভুত। দুটি পাখি গল্পের আম গাছে বাসা বাঁধতে আসে। তারা ডিম পাড়ে এবং ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করে। মানুষের সমাজকে পাখিদের চোখে কেমন দেখায়, তা এ গল্পে ছবির মতো ফুটে উঠেছে। সন্তান লালনপালনের জন্য পাখিদেরকেও যে যেতে হয় অবর্ণনীয় কষ্ট ও উৎকণ্ঠার ভেতর দিয়ে, তার এক বলিষ্ঠ শিল্পকর্ম এই ‘পাখির বাসা’ গল্পটি। বিজ্ঞান ছাড়া একদিন এটি সম্ভবত বিজ্ঞানের প্রতি সমাজে বেড়ে ওঠা ধর্মীয় প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে কৌতুকপূর্ণ জবাব। এখানে আলিম মিয়া নামের একজন বিজ্ঞানবিদ্বেষী ব্যক্তি হঠাৎ ধর্মীয় আবেগ থেকে বিজ্ঞানকে বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন। বিজ্ঞান ছাড়া তার দিনটি কেমন কাটে, এটিই এ গল্পে মর্মান্তিকভাবে ধরা পড়েছে। টয়োটা করোলা খুবই অভিনব গল্প। একটি গাড়ি এখানে তার জীবনের কিছু অংশ নিজ কণ্ঠে বর্ণনা করে। লেখকের কলমের স্পর্শে সে হয়ে উঠে সত্য-দেবতা ভেরিটাস। জাপান থেকে বাংলাদেশে আসার পর তাকে কী কী অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তা গতিশীল রেকর্ডের মতো এ গল্পে ফুটে উঠেছে। যেন সমাজের এক নির্মোহ সাক্ষীকে লেখক গল্পের ছলে হাজির করেছেন। জার্নি বাই বাস অনেকের ধারণা, মহিউদ্দিন মোহাম্মদ কাটখোট্টা লেখক। তার কোনো লেখায় প্রেম-ভালোবাসা, প্রণয়, এসব খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু তিনি যে এমন মারাত্মক ভঙ্গিতে রোম্যান্টিক প্রেম-সঙ্কট রচনা করতে জানেন, তা এ গল্প না পড়লে বিশ্বাস হবে না। সমাজের ভয়ে তরুণ-তরুণীরা কীভাবে তাদের প্রেমকে অবদমিত রাখে, কেন তারা তাদের মনের কথা বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে সহজে জানাতে পারে না, তার এক বিমূর্ত রঙিন ছবি এ গল্পটি। ড্রাইভিং লাইসেন্স বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির যে-বিড়ম্বনা, তা এখানে নিপুণ
0 average based on 0 reviews.
Questions not available